ডোপামিন রিল্যাপ্স থেকে বাঁচুন
আপনি কি ডোপামিন রিল্যাপ্স সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে আজকের পোস্ট টি শুধু আপনার জন্য। কারণ আজকে আমরা আলোচনা করবো শুধু স্বাস্থ্য বিষয়ের ওপর।
নিচে আপনাদের জন্য ডোপামিন রিল্যাপ্স ধাপে ধাপে লিখা হয়েছে। এখান থেকে আপনারা খুব সহজেই ডোপামিন রিল্যাপ্স জানতে পারেন।
ডোপামিন রিল্যাপ্স সম্পর্কে শুরু করার আগে মনোযোগ দিয়ে পড়েন । দেরি না করে চলেন ডোপামিন রিল্যাপ্স জেনেই নেই । চলুন দেখে নেয়া যাক ডোপামিন রিল্যাপ্স ।
অভিনন্দন! আপনি মাত্র একটি ডোপামিন ডিটস্স শেষ করেছেন আর এখন আমি বাজি ধরে বলতে পারি আপনি আগের চেয়ে রিল্যাক্স হয়েছেন এবং আপনার দিনের উপর আগের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ এসেছে। কিন্তু এরপর কী?
যদি আপনি যত্নশীল না হন এটা ফিরে আসা অনিবার্য। পুরাতন স্বভাব সহজে মরে না। একারণে এই সেকশনে আমরা নির্দিষ্ট কিছু জিনিস আলোচনা করব, যেন আপনি কখনো শেষ না হওয়া স্টিমুলেশন লুপ বা প্যাঁচ এর ফিরে আসা থেকে বাঁচতে পারেন।আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন হরমোন বৃদ্ধির উপায়।
চলুন শুরু করি
১. যখন পুনরায় ফিরে আসবে তখন সতর্ক হউন |
স্থায়ী পরিবর্তন ঘটানোর চাবিকাঠি হচ্ছে আত্ম-সচেতনতা ৷ রিল্যান্স কমিয়ে ফেলা বা পরিহার করার প্রথম ধাপ হচ্ছে আপনি যে ওভার স্টিমুলেটেড হচ্ছেন তা খেয়াল করা। যখন আপনি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে সঞ্জররাম করছেন কিছুক্ষণের জন্য থামুন। আপনার প্রতিদিনের রুটিন পুনরায় বিবেচনা করুন ।
সত্যি বলতে, আপনার সম্ভবত কিছু দিন, সপ্তাহ বা মাস পরেই রিল্যান্স হবে এবং এটা পুরোপুরি স্বাভাবিক। আমি নিজেকে দেখি কিছু সময়কাল ধরে আমি অনেক বেশি ফোকাসড থাকি আবার কিছু সময়কাল থাকে আমি এত বেশি অতিরিক্ত স্টিমুলেটেড আর অস্থির থাকি যে আমার যে কোনো কাজ শেষ করতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়।আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন বেড়ে গেলে কি হয়।
২. আপনি ও আপনার মনের সাথে যুদ্ধ বুঝতে শিখুন
যখন এটা আপনার সাথে হবে তখন চাবিকাঠি হচ্ছে এটা মেনে নেওয়া ও নিজেকে দোষী না ভাবা । নিজেকে কষ্ট দিয়ে আপনি সফল প্রতিদিনের রুটিন বানাতে পারবেন না। এটা আপনার জন্য খারাপ হবে। এটার ভেতরেই বাস করবেন না। নিজেকে অপরাধী ভাবার বা লজ্জা পাবার কিছু নেই। সহজভাবে আপনার রুটিন পুনরায় শুরু করুন এবং প্রতিদিন একই সময় একটানা করুন ।
৩. দুনিয়া আপনার বিপক্ষে বুঝতে শিখুন
আজকের দুনিয়ায় মনোযোগ ধরে রাখা অবিশ্বাস্যভাবে কঠিন। এর কারণ সবাই আমাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং আমি শুধু আমাদের পরিবারের সদস্য বন্ধু অথবা সহকর্মীদের কথা বলছি না। আমি বলছি 'বিপণনকারী, ইউটিউবার অথবা ব্লগারদের কথা।
আজকাল আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক কোম্পানির সবচেয়ে বড় ইনকামের উৎস হচ্ছে লোকজনের এর মনোযোগ আকর্ষণের সক্ষমতা। অল্পকথায় বলতে গেলে আপনার মনোযোগ মূল্য অনেক টাকার সমান। যে কারণে ইউটিউব,ফেসবুক, ইস্সটাগ্রাম আপনাকে স্ক্রিনে আঠার মতো আটকিয়ে রাখতে যে কোনো কিছু করে।আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন বৃদ্ধির ঔষধ।
যাই হোক, আপনার ফোকাস বা মনোযোগ আপনার জন্যও অনেক দামি ৷ যখন আপনি আপনার ফোকাস পুনুরুদ্ধার করে এটাকে জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য অর্জনে কাজে লাগাতে পারবেন, আপনার জীবনে আমূল পরিবর্তন আসবে ৷ আপনার ফোকাসকে বড় কাজের দিকে ধাবিত করে আপনি আরো বেশি টাকা কামাতে পারবেন। আর এটাকে অর্থপূর্ণ কাজের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে আপনি আগের চেয়ে ভালো থাকবেন (যেমন বলা যায় পরিবারের সাথে সময় কাটানো অথবা আপনার প্রিয় শখ নিয়ে ব্যস্ত থাকা)।
আমার পয়েন্ট এটাই। পৃথিবী আপনার বিরুদ্ধে কাজ করছে। আপনার মনোযোগ ছিনিয়ে নেবার জন্য কেউ না কেউ আছেই। যেমন আপনার দুইটা বিকল্প আছে। সিস্টেম এবং অভ্যাস গড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ফোকাস রক্ষা করবেন অথবা আপনি অপ্রস্তুত থাকবেন এবং যে কেউ আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময়ে আপনাকে বিক্ষিপ্ত করবে।আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন কমে গেলে কি হয়।
আপনি কোন অপশন বেছে নিতে চান?
৪. আকস্মিক ঘটনার পরিকল্পনার প্রস্তুতি নিন
রিল্যান্স বা পুনরায় আগের জায়গায় ফিরে আসা থেকে বীচার একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে আকস্মিক ঘটনার জন্য পরিকল্পনা তৈরি করুন। এটা করার জন্য আপনি আপনার মনোযোগ হারিয়ে আগের ব্যবহারে ফিরে আসতে পারেন এর সম্ভাব্য সকল পথ নিয়ে চিন্তা করুন এবং সেগুলো আটকানোর জন্য আকস্মিক ঘটনার ব্যাপারে পরিকল্পনা নিন ।
কাজেই কী কারণে আপনার রিল্যান্স হতে পারে বলে মনে হয়?
যেমন সকালে আমার প্রথম কাজ যদি ফোন চেক করা হয়, দেখা যাবে আমি একটা স্টিমুলেশন থেকে আরেক স্টিমুলেশন বা উদ্দীপনায় লাফিয়ে যাচ্ছি। আমি ফেসবুক চেক করব, হয়তো একটা মেসেজের রিপ্লাই দিব এই মেসেজ হয়তো আমাকে মনে করায়ে দিবে আমাকে অন্যকিছু করতে হবে বৰা আমাকে কোনো আইডিয়া দেবে। হঠাৎ করে আমার মস্তিষ্ক বিচলিত হবে আর আমাকে এই সকালে লেখালেখি না করার অনেক ভালো ভালো কারণ দেখাবে ।
আকস্মিক ঘটনার পরিকল্পনার জন্য
- আপনাকে সর্বচ্চে৷ | বিক্ষিপ্ত করতে পারে এমন সবগুলো কাজ বিবেচনা করুন। এদেরকে খোঁজার জন্য আগে যে “পারি না” এর লিস্ট বানিয়েছেন তা ঘুরে আসুন॥
- সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি কী ঘটতে পারে তা চিন্তা করুন৷ কী কারণে আপনি আপনার মনোযোগ হারিয়ে সকাল বেলার রুটিন মেনে চলা বন্ধ করে দিতে পারেন? আপনার আ্যাকশান গাইড ব্যবহার করুন, আপনি যে করতে পারেন তা লিখে ফেলুন ।
- মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন। আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? এখন আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে চান? নিজেকে দেখুন এই ঘটনাগুলো সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো উপায়ে মোকাবিলা করছেন।
৫. একটি টেকসই ব্যবস্থা স্থাপন করুন
আপনার স্টিমুলেশন এর মাত্রা কমিয়ে রাখার চাবিকাঠি হচ্ছে একটি সহজ ও টেকসই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। এই সিস্টেমে আপনি সকল ডিস্ট্রাকশন বা বিক্ষিপ্তকারী জিনিস বন্ধ করে দেবেন সেটা জরুরি নয় বরং এটায় এমন কিছু অভ্যাস স্থাপন করুন যা আপনাকে ফোকাসড বা মনোযোগী থাকতে সাহায্য করবে।
অতএব, আমরা আগে যেমনটা দেখেছি প্রতিদিনের জন্য একটা সহজ রুটিন নিশ্চিত করুন যেটায় আপনি ধারাবাহিকভাবে লেগে থাকবেন ।আরো জানতে পড়ুন মস্তিষ্কের ডোপামিন তৈরির কোষগুলো নষ্ট হলে কি রোগ হয়।
৬. আজকালকার নিউরোট্রা্সমিটারগুলো প্রস্তুত করুন
ওভার স্টিমুলেশন থেকে রক্ষা পাবার জন্য বর্তমান সময়ের নিউরোট্রান্সমিটার যেমন এন্ডরফিন, অক্সিটোসিন অথবা সেরোটোনিনকে প্রস্তুত করুন। এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলো ডোপামিন নিউরোট্রাসসমিটার এর ঠিক বিপরীত যা আপনাকে শান্ত করবে এবং মানসিক ভাবে উপস্থিত রাখবে ।
এই নিউরোট্রা্সমিটারগুলোকে কার্যকর করার জন্য আপনাকে এমন কাজে অংশ নিতে হবে যা আপনাকে বর্তমানে আবদ্ধ রাখে, যেমনঃ
মেডিটেশন বা ধ্যান :
অল্প কিছু সময় যেমন মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য আপনি করতে পারবেন। এটা করার জন্য চোখ বন্ধ করুন ও আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস এর দিকে মনোযোগ দিন। আপনি আপনার পঞ্চইন্দ্রিয় এর যে কোনো একটাতেও মনোযোগ দিতে পারেন। আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন হরমোন এর কাজ কি।
এরপরে আরেকটা ইন্দ্রিয়তে মনোযোগ দিন এরপর আরেকটায় এভাবে করতে থাকুন ৷ মেডিটেশন করার কোনো ভুল পদ্ধতি নেই। নতুনদের জন্য মেডিটেশন এর বই খুঁজে বের করতে পারেন অথবা অনলাইনে মেডিটেশন ভিডিও খুঁজে দেখতে পারেন অথবা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন কোন পদ্ধতি আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ করে ।
স্ট্রেচিং অনুশীলন :
আপনি যখন স্টেচিং এর শরীরচর্চা করবেন তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার শরীর রিল্যাক্স হবে এবং আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস ধীর হবে যেটা আপনাকে শান্ত ও বর্তমানে থাকতে সাহায্য করবে ।
মননশীলতা :
এর অর্থ হচ্ছে আপনার ভেতরে বা আশেপাশে কী হচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি সচেতন । মননশীলতা চর্চার অনেক উপায় আছে । যেমন আপনি খুব ধীরে খাবার খেতে পারেন তখন আপনি প্রতিটি খাবারের স্বাদ আর গঠন খেয়াল করবেন। অথবা আপনি আপনার মনোযোগ আপনার পুরো শরীরে দেবেন এবং পা থেকে মাথা পর্যন্ত হওয়া সব অনুভূতি খেয়াল করবেন। অথবা আপনি যখন গৃহস্থালির বা অফিসের কাজ শেষ করছেন তখন সম্পূর্ণভাবে যতটা সম্ভব বর্তমানে থাকার চেষ্টা করবেন।
চিন্তাশীল হাঁটাহাঁটি
যখন হাঁটাহাঁটি করেন তখন কতটা বর্তমানে থাকেন। আপনি কি পাখির গান শুনতে পান? আপনি কি আপনার মুখে এসে লাগা বাতাস অনুভব করতে পারেন? আপনি কি মেঘের বিভিন্ন আকৃতি খেয়াল করেন? প্রায়শই মানুষের মাথায় পরের কাজ কী হবে এই চিন্তা আটকে যায় অথবা তারা তাঁদের জীবনের সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে । তাঁদের মতো হবেন না। আরো জানতে পড়ুন সিগারেট খেলে কি ডোপামিন হরমোন বাড়ে।
এমনভাবে খেয়াল করুন যেন সেগুলো প্রথমবার দেখছেন। আপনার প্রতিটি সেল এ ফোকাস করুন৷ যা আগে কখনো দেখেননি তা খেয়াল করুন । যেসব শব্দ আগে কখনো শুনতে পাননি তা শোনার চেষ্টা করুন৷ যা আগে কখনো ঘ্রাণ পাননি তা খুঁজে পাবার চেষ্টা করুন। শরীরে যেসব অনুভূতি আগে খেয়াল করেননি সেগুলো খেয়াল করার চেষ্টা করুন । বর্তমানে থাকুন!
গভীর সামাজিক যোগাযোগ :
অন্য মানুষদের সাথে মেশার সময় অক্সিটোসিন নামক নিউরোট্রা্সমিটার কার্যকর হয় যেটাকে অনেক সময় বলা হয় “ভালোবাসার হরমোন” । আপনি যত বর্তমানে বাস করবেন তত বেশি সংযুক্ত হতে পারবেন এবং বন্ধনের আনন্দদায়ক অনুভুতি উপভোগ করবেন। কাজেই যেসকল মানুষের প্রতি আপনি যত্নশীল তাদের সাথে বেশি করে সময় কাটানো নিশ্চিত করুন ।
একঘেয়েমি :
কিছু না করে বসে থাকাও আপনার স্টিমুলেশন এর লেভেল কম রাখার একটা ভালো উপায় । আমাদের মন সবসময় কিছু না কিছু করতে চায়। কিছু সময় এর জন্য কিছু না করে থাকাও ভালো ।আরো জানতে পড়ুন ডোপামিন হরমোন কখন নিঃসৃত হয়।
বসুন এবং নীরবে খাবার খান, কোনো নির্দিষ্ট অভিপ্রায় অথবা উপরে বলা কিছু কাজ করার মাধ্যমে আপনি শান্ত থাকবেন ও দিনব্যাপী বর্তমানে অবস্থান করবেন। এর ফলে আপনি ওভার স্টিমুলেটেড হবার ঝুঁকি কমাবেন আপনার কী অবস্থা? আপনার প্রতিদিনের রুটিনে আপনি কী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চান?
আ্যাকশান স্টেপ
আপনার আ্যাকশান গাইড ব্যবহার করে শান্ত ও ফোকাসড থাকার জন্য অন্তত একটি কাজ যা আপনি প্রতিদিন করতে চান তা লিখে ফেলুন ।
৩০ দিন চ্যালেঞ্জের জন্য অঙ্গীকার করুন : ত্র ডোপামিন ডিটস্স থেকে উপকার পাবার জন্য আমি আপনাকে একটা সহজ রুটিন বাস্তবায়ন করতে উৎসাহিত করছি এবং আগামী ৩০ দিন এই রুটিনে লেগে থাকুন। এটাকে ৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিন। যখন আপনি ডোপামিন ডিটক্স শেষ করবেন তখন তা আপনাকে পুরাতন অভ্যাসে প্রত্যাবর্তন করা থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করবে।
অন্যদিকে আপনি এই সিরিজের অন্য বইগুলো পড়তে পারেন যেহেতু আপনি আপনার ফোকাস ও উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে নেবার জন্য যাত্রা শুরু করেছেন। এই সিরিজের পরবর্তী প্রতিটি বই মাত্র ৭ দিনে আপনাকে একটি করে সৃশ্ম দক্ষতা তৈরি করতে সাহায্য করবে।
- ইমিডিয়েট আ্যাকশান, এটায় আপনি কীভাবে- গড়িমসি জয় করা যায় তা আবিষ্কার করবেন
- পাওয়ারফুল ফোকাস, আপনি কীভাবে স্বচ্ছতা
- অর্জন করবেন ও লেজার-তীক্ষু ফোকাস গড়ে
- তুলবেন তা শিখতে পারবেন
- স্ট্যাটেজিক মাইন্ডসেট, আপনার চিন্তা করার সূক্ষ্ম দক্ষতা শানিয়ে কীভাবে স্টিক স্বচ্ছ
কৌশল তৈরি করে আপনার উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বাড়িয়ে নিতে শিখবেন ।
